শিরোনাম

প্রকাশঃ ২০২২-০৬-১৮ ১৬:৪২:৫৫,   আপডেটঃ ২০২৩-০৯-২৯ ০৭:৪৪:০৭


স্বামীর অবেহেলা, ট্রেনের নিচে ঝাপ দিলেন নারী, ভাগ্যগুণে বেঁচে ফেরা

স্বামীর অবেহেলা, ট্রেনের নিচে ঝাপ দিলেন নারী, ভাগ্যগুণে বেঁচে ফেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

কুমিল্লায় ট্রেনের নিচে ঝাপ দিয়ে বেঁচে যাওয়া সেই নারীর বাম পা কেটে ফেলা হয়েছে। শনিবার (১৮ জুন) কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের নারী ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় তার মাথার পাশে বসে আছেন ছোট বোন সারমিন আক্তার।

বেবী বেগমের সাথে কথা বলতে চাইলে তার ভাই মো. হাসান (ভোলা) বাধা দেন।

পরে বোন সারমিন জানান, বেবী বেগম অপ্রকৃতস্থ। প্রায়শই পাগলামি করে। প্রায় ৭বছর আগে শাসনগাছা এলাকার সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক হেলাল উদ্দিনের সাথে বেবীর বিয়ে হয়। প্রথম দিকে পারিবারিক সম্পর্ক ভালো ছিল। ৬বছর আগে তাদের একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। পরে দেড় বছর আগে বেবীর স্বামী হেলাল উদ্দিন তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। একপর্যায়ে বেবী স্বামীর বাড়ি শাসনগাছা এলাকা ছেড়ে বাবার বাড়ি বাগিচাগাও এলাকায় চলে আসেন। তাদের ডিভোর্স হয়নি। তার স্বামী তার ছেলের দায়িত্বও নেয়নি। আর তার আয় ইনকাম নেই। ৬ বছরের ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করানো। তার খরচ বহন করার তেমন কোন উপায় নেই। যেকারণে বেবী পাগলের মত হয়ে যায়। মূলত স্বামীর অবেহেলাতেই বেবী ট্রেনের নিচে ঝাপ দিতে যান।

কিন্তু বেবী বেগমের সাথে কথা বলে তেমন মনে হয়নি। বেবী বেগম স্বাভাবিকভাবেই বলেন, আমারে একটা প্লাস্টিকের পা লাগাইয়া দেন। আমি আর মরতে যামু না। একথা বলতে বলতে কান্না শুরু করেন। 

এর আগে, শুক্রবার (১৭ জুন) সকালে কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় আত্মহত্যার জন্য দৌড়ে এসে চলন্ত ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে যান বেবী বেগম। ট্রেনের ধাক্কায় থেঁতলে যায় তার শরীর। ট্রেন চলে যাওয়ার পর আহত অবস্থায় স্থানীয়দের সাহায্যে নেওয়া হয় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক নাফিজ ইমতিয়াজ আহমেদ  বলেন, বেবী বেগমের অবস্থা আগের তুলনায় ভালো তবে এখনও ৪৮ ঘণ্টা যাওয়া ছাড়া তাকে ঝুঁকিমুক্ত বলা যায় না। 

তিনি আরও বলেন, বেবী বেগমকে এখনই অপ্রকৃতস্থ বলা যায় না। তার স্বাস্থের আরও উন্নতি হলে আমরা তাকে মানসিক ডাক্তার দেখাবো। তখনই এই বিষয়টি ক্লিয়ার হবে। 

কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, আমি ব্যক্তিগত স্টেশনের কয়েকজনের কাছ থেকে তার জন্য কিছু টাকা উঠিয়ে দিয়েছি। মহিলা গরীব মানুষ। যদি আইনি কোন সাহায্য চান তাহলে আমরা অবশ্যই করবো।



www.a2sys.co

আরো পড়ুন