শিরোনাম

প্রকাশঃ ২০২৩-০৩-২৭ ১৮:০০:৩৮,   আপডেটঃ ২০২৩-০৫-২৫ ১৮:৩০:৪১


আইনজীবী বানিয়ে দেয়ার কথা বলে অর্ধকোটি টাকা নিয়ে প্রতারণা, ভুয়া আইনজীবী গ্ৰেফতার

আইনজীবী বানিয়ে দেয়ার কথা বলে অর্ধকোটি টাকা নিয়ে প্রতারণা, ভুয়া আইনজীবী গ্ৰেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক 

কুমিল্লায় প্রতারণার অভিযোগে এহতেশামুল হক নোমান নামে এক ভুয়া আইনজীবীকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে। প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে অসংখ্য শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের নিকট হতে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় ওই ভুয়া আইনজীবী ও তার  সহযোগীকে গ্ৰেফতার করে র‌্যাব।

সোমবার দুপুরে কুমিল্লার র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে গণমাধ্যমকে জানান, প্রতারক নোমান ২০১৪ সালে তিনি লাখ টাকার বিনিময়ে ফারুক নামের এক ব্যক্তির নিকট হতে আইন বিষয়ে অনার্স উত্তীর্ণ সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেন। পরবর্তীতে নোমান তার পরিচিত বন্ধু কাউসারের মাধ্যমে ২০১৫ সালে কুমিল্লা কোর্টে কর্মরত আইনজীবীর একটি কোচিং সেন্টার ভর্তি হন। উক্ত আইনজীবীর যাবতীয় কাজ সম্পাদন করার জন্য একজন লোকের প্রয়োজন হতে তিনি নোমানকে তার নিজের অধীনে নিয়োগ করেন এবং নোমান তার অধীনে কুমিল্লা কোর্টে কাজ শুরু করে। ২০১৬ সালের প্রথম দিকে নোমান পায়ের ব্যাথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে ০৬ মাস কর্মবিরতিতে থাকে এবং ০৬ মাস পর আইনজীবির নিকট গেলে তিনি নতুন একজনকে তার স্থলে নিয়োগ করেছেন মর্মে নোমানকে অবগত করেন। ২০১৭ সালে নোমান ঐ কোর্টেই কর্মরত অন্য একজন আইনজীবীর অধীনে কাজ করতে থাকে। পরবর্তীতে একই সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্যপদ লাভের আশায় বার কাউন্সিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হন এবং অনিয়মিতভাবে কোর্টে কাজ করতে থাকেন। ইতিমধ্যে নোমান মুসলিম বিবাহ সম্পাদন সহ অন্যান্য আইনী কার্যক্রম মোটামুটিভাবে রপ্ত করে ফেলেন ও কর্মক্ষেত্রে তার প্রতিফলনও ঘটায়। ২০২১ সালে সে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্যপদ লাভের আশায় বার কাউন্সিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং পুনরায় অকৃতকার্য হন। 

২০২২ সালের দিকে কোর্টের যাবতীয় কর্মকান্ডে নোমানের যথেষ্ট জ্ঞান অর্জনের পর সে মোটা অংকের টাকা উপার্জনের পথ খুজতে থাকে। ইতিমধ্যে সে নিজের নামে একটি ভুয়া এ্যাডভোকেট কার্ড ও মানবাধিকার কার্ড তৈরী করে ফেলে। 

পরবর্তীতে নোমান তার বন্ধু কাউসারের মাধ্যমে পরিচিত হয়। রেজাউল পেশায় একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবি হওয়ায় কোর্টে যাওয়া আসা ও কাজ করার সময় প্রতারক নোমানের সাথে পরিচিত হয়। এরই মধ্যে প্রতারক নোমান তার ভুয়া এ্যাডভোকেট কার্ড ও মানবাধিকার কর্মীর কার্ড দেখিয়ে তার বিশ্বস্ততা অর্জন করে ফেলে ও নিজেকে আসল আইনজীবী বলে তার কাছে পরিচয় দেয়। কাউসারকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষায় পাশ করার ফাঁদে ফেলে ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা প্রতারক নোমানকে প্রদান করে। 

ভুক্তভোগী কাউসারের মত রেজাউল নামে আরও এক ব্যক্তিকে পাশ করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে  ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এভাবে  ১৭ জন শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের কাজ থেকে আরো ২২ লাখ ১০ হাজার টাকা নেয় প্রতারক নোমান। এভাবে অসংখ্য শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের কাজ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়।

প্রতারক নোমান ও তার সহযোগীকে শনাক্ত ও গ্রেফতার করতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে এবং মাঠ পর্যায়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে। ছায়া তদন্তের প্রাপ্ত তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ২৬ মার্চ কুমিল্লা নগরীর ধর্মসাগর এলাকা হতে প্রতারক মোঃ এহতেশামুল হক নোমান (৩৪) ও তার সহযোগীকে শ্যালক জাহিদ হাসান ভূঁইয়াকে আটক করা হয়। 

নোমান নগরীর ঝাউতলা এলাকার মোঃ শামসুল হকের ছেলে এবং জাহিদ হাসান ভূইয়া কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাহেরচর এলাকার মোঃ মহসীন ভূইয়ার ছেলে।



www.a2sys.co

আরো পড়ুন