শিরোনাম
- হোম
- কুমিল্লায় সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকদের মন ভালো নেই
কুমিল্লায় সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকদের মন ভালো নেই

মাসুদ আলম।।
কুমিল্লার প্রান্তিক কৃষকরা এখন খুবই ব্যস্ত। শীতের সবজি চাষ, বিক্রি ও পরিচর্যায় তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন। আগাম জাতের সবজি ক্ষেত থেকে উঠিয়ে বিক্রি করে আবারও ওই জমিতে অন্য জাতের সবজি চাষে দিনের বেশির ভাগ সময় মাঠেই থাকছেন। চাষের খরচ পুষিয়ে সবজি বিক্রিতে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। তবে পোকামাকড়ের আক্রমণে সবজির ক্ষতি এবং পোকা দমনে কীটনাশক ও সার প্রয়োগে সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা ও পরামর্শ না পাওয়ায় সবজি উৎপাদনের লক্ষমাত্রায় পৌঁছাতে পারছেন না কৃষকরা। যার কারণে চাষে ব্যস্ত থাকলেও কৃষকদের মন ভালো নেই।
কুমিল্লার সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের সুবর্ণপুর এলাকার মিরপুরে গোমতী নদীর চরে ১২ মাসই নানা জাতের সবজি চাষ করছেন স্থানীয় প্রান্তিক কৃষকরা। শুধু মিরপুর নয়, বিবির বাজার ভারত সীমান্ত থেকে শুরু করে কুমিল্লার বুক চিরে বয়ে যাওয়া গোমতী নদীর দুই পাড়ের চর জুড়ে শীত ও গ্রীস্ম কি? সারাবছরই সবজিসহ নানান জাতের সবজি চাষে ব্যস্ত থাকেন স্ব স্ব এলাকার কৃষক। সেই সাথে কুমিল্লার সদর, বুড়িচং, সদর দক্ষিণ, লালমাই, বরুড়া, চান্দিনা, ব্রাহ্মণপাড়া, মুরাদনগর, দেবিদ্বার এবং দাউদকান্দি ও চৌদ্দগ্রামের উঁচু এলাকাগুলোর ফসলি জমিতে শীতের সবজি চাষে ব্যস্ত থাকেন উপজেলার স্থানীয় চাষিরা।
কুমিল্লার সদর পাঁচথুবী ইউনিয়নের সুবর্ণপুর এলাকার মিরপুরে গোমতী নদীর চরে কৃষক মমিন মিয়া তিন কানি জমি জুড়ে সবজি চাষ করেছেন। আগাম সবজি মুলাসহ তিনি লালশাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, লাউ ও মরিচের চাষ করেন। আগাম সবজি মুলা উঠিয়ে বিক্রির সাথে শুরু করেছে বাঁধাকপি ও ফুলকপির বিক্রিও। বাজারজাত হয়ে উঠছে মাঠে থাকা টমেটো, লাউ ও মরিচ। সেই সাথে রোপন শেষ করেছেন করলা, ঢ্যাঁড়শ, চিচিঙ্গা, ঝিঙা ও আলু।
তিনি বলেন, গোমতীর চরে দীর্ঘ বছর যাবত ১২ মাসই সবজি চাষ করে যাচ্ছেন। এখানকার মাঠি উর্বর হওয়ায় সবজিসহ যে কোন ফসল ভালো হয়। তিনি তার তিন কানি জমিতে চাষাবাদ করে বছরে ৮/৯ লাখ টাকার সবজি বিক্রি করেন। এই জামিতেই তিনি আরও বেশি সবজি উৎপাদন করতে পারতেন জানিয়ে কৃষক মমিন মিয়া আরও বলেন, যদি উপজেলা কিংবা ইউনিয়ন কৃষি অফিস থেকে ভালো মানের বীজ, সার ও সহযোগিতা বা পরামর্শ পেতেন। তাহলে কাঙ্খিত লক্ষমাত্রায় পৌঁছাতে পারতেন। এক বছর হবে স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকেই তারা চোখে দেখেননি। পাননি কোন কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ। বর্তমানে মাঠে থাকা বাঁধাকপি, ফুলকপি, মুলা ও লাউয়ের পাতায় লেদা পোকা ও উই পোকার আক্রামণে সবজি নষ্ট শুরু হয়েছে। পোকা দমনে দোকানে গিয়ে সমস্যার কথা বললে আন্দাজ করে দোকানদাররা যে কীটনাশক দিচ্ছেন সেটাই তারা সবজিতে প্রয়োগ করছেন। কিন্তু পোকার আক্রামণ রোধ করতে পারচ্ছেন না।
একই এলাকার মিরপুর গোমতী নদীর বাঁধের ভিতরে চরে কৃষক মনির হোসেন দুই কানি এবং আরেক কৃষক আহম্মেদ আলী পাঁচ কানি জমিতে ১২ মাসই সবজি চাষ করে যাচ্ছেন। কৃষক মমিন মিয়ার মতো তাদেরও মাঠে চাষকৃত মুলা, লালশাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, লাউ ও মরিচ রয়েছে। অর্ধেকের বেশি আগাম সবজি মুলা উঠিয়ে রোপন করেছেন করলা, ঢ্যাঁড়শ, চিচিঙ্গা, ঝিঙা ও আলু।
মনির হোসেন ও আহম্মেদ আলী সবজি চাষে এখন ব্যস্ত। কিন্তু তাদের মাঠে থাকা সবজিতে পোকামাকড় আক্রমন করেছে। সঠিক মানের ওষুধ কিংবা কীটনাশক প্রয়োগে তারা কোন কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ পাচ্ছে না। কৃষক মমিন মিয়ার মত তাদেরও অভিযোগ স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
সহযোগিতা, পরামর্শ এবং চাইলেও দেখা না পাওয়ার বিষয়ে তিন কৃষক মমিন মিয়া, মনির হোসেন ও আহম্মেদ আলীর অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে পাঁচথুবী ইউনিয়নের সুবর্ণপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, আমি এই ব্লকে ২/৩ মাস পূর্বে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। অসুস্থ থাকায় মিরপুরে গোমতী চরের কৃষকদের সাথে দেখা করে তাদের মাঠে থাকা ফসলের খোঁজখবর নিতে পারিনি। আমি বর্তমানে অসুস্থ রয়েছি। তবে সুস্থ হয়ে সর্বপ্রথম ওইখানকার কৃষকদের সাথে দেখা করে তাদের সবজি বা ফসলের খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনে পরামর্শ প্রদান করবো।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত ৪ নভেম্বর “সেবাবঞ্চিত কুমিল্লার কৃষক” ‘উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ’ শিরোনামে কুমিল্লার স্থানীয় শীর্ষ ও জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকা কুমিল্লার কাগজে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তখন কুমিল্লার চান্দিনা ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার কয়েকটি ব্লকে কর্মরত উপ-সহকারী কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে কৃষকদের অভিযোগে প্রেক্ষিতে জেলার বেশিরভাগ উপ-সহকারী কর্মকর্তা মাঠের কৃষকদের সহযোগি ও পরামর্শ প্রদানে মাঠে না থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়। যার প্রমাণ পূণরায় কুমিল্লা সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের সুবর্ণপুর ব্লকে কৃষকদের অভিযোগের সাথে ফুটে উঠেছে।
কুমিল্লা জেলা কৃষি কর্মকর্তা সুরজিত চন্দ্র দত্ত বলেন, আমরা কৃষকদের জন্য কাজ করি। আমাদের কাজেই কৃষকদের সেবা দেয়া। কুমিল্লায় শীতকালীন সবজির ভালো ফলন হচ্ছে। তবে মাঠের সবজিতে পোকামাকড় আক্রমণের বিষয় সহযোগিতা ও পরামর্শ নিতে পারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। যদি কৃষক তাদের কাছ থেকে সেবা না পান, তাহলে ওই কৃষক ইউনিয়নের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাকে জানাতে পারেন। খুব বেশি জরুরি মনে করলে আমার কাছে অভিযোগ করতে পারেন। আমরা সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা বোধ করবো না।

পরীমনির "পাফ ড্যাডি" ওয়েব সিরিজ বন্ধে আইনি নোটিশ
পরীমনির অভিনীত ওয়েব সিরিজ "পাফ.. বিস্তারিত

পরীমনির "পাফ ড্যাডি" ওয়েব সিরিজ বন্ধে আইনি নোটিশ
পরীমনির অভিনীত ওয়েব সিরিজ "পাফ.. বিস্তারিত

পরিবেশ বন্ধু বৃক্ষ পেয়ে শিশুদের মুখে সবুজ হাসি
এসব বৃক্ষ রোপণ করা হবে শিশুদের.. বিস্তারিত

কুমিল্লায় বৃষ্টির পানিতে বেরিয়ে আসলো অবিস্ফোরিত মটারশেল
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সম.. বিস্তারিত

চাচার সঙ্গে প্রবাসে ঝগড়া, দেশে ফিরে ভাইকে খুন করে আল-আমিন
অভিযুক্ত নিহতের চাচাতো ভাই আল.. বিস্তারিত

মেঘনায় যুবককে ঝুলিয়ে পিটিয়ে ভাইরাল ইউপি সদস্য
কুমিল্লা এক যুবককে ঝুলিয়ে পেটা.. বিস্তারিত