শিরোনাম

প্রকাশঃ ২০২১-০৯-০৮ ০৯:৪০:৫৩,   আপডেটঃ ২০২৩-০৯-২৩ ২৩:৫২:৪৭


নবজাতক মৃত্যুর অভিযোগে গৌরীপুর খিদমা ডিজিটাল হসপিটাল ফের সিলগালা

নবজাতক মৃত্যুর অভিযোগে গৌরীপুর খিদমা ডিজিটাল হসপিটাল ফের সিলগালা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দাউদকান্দির গৌরীপুরে আবারও খিদমা ডিজিটালি হসপিটাল সিলগালা করেছে প্রশাসন। ৭ মাসের গর্ভবতী নারীর সিজার অতঃপর নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগে

দায়ের কৃত মামলায় এই হসপিটালটি সিলগালা করেন দাউদকান্দি উপজেলা প্রশাসন।

৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ২টা সময় দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ কামরুল ইসলাম খান-এর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে এই সিলগালা করা হয়। উল্লেখ্য যে, এর আগেও অপচিকিৎসার অভিযোগে এই হসপিটালটি সিলগালা করা হয়েছিল।অদৃশ্য শক্তিতে আবারও চালু হয় এই হসপিটাল!

এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ শহিদুল ইসলাম শোভন, গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ সাইফুল ইসলাম, এসআই মোঃ ফারুক আহমেদ ও নিরাপদ চিকিৎসা চাই কুমিল্লা জেলা আহ্বায়ক মো. আলী আশরাফ খানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত-সমালোচিত এই খিদমা ডিজিটাল হসপিটালের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা গণমাধ্যম  ও প্রশাসনের বরাবর একের পর এক অভিযোগ করে আসছিল। 

রোগী উপজেলার ইছাপুর গ্রামের স্বর্ণেহারের বক্তব্য, 'গত মাসে আমি খিদমা হসপিটালে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে আসি। তখন হসপিটালের মালিক সাইফুল ইসলাম আল্ট্রাসনোগ্রাম করেন এবং ২ আগস্ট সিজারের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন।

পরে আমি আসতে দেরি হওয়ায় 'হসপিটালের মালিক সাইফুল ইসলাম বারবার কল দিয়ে আমাকে ৪ আগস্ট  হসপিটালে নিয়ে আসে। হসপিটালে ঢোকার পরপর সে নিজে আবার আলট্টাসনোগ্রাম করেন এবং দ্রুত সিজার না করলে আমার ও বাচ্চার সমস্যা হবে বলে ভয়-ভীতি দেখান'। 

তিনি আরও জানান, 'আমি ৭ মাসের অন্তঃসত্বা বলার পরও একরকম জোর করে সে আমাকে সিজারের রুমে নিয়ে যায় এবং সিজারে বাধ্য করে। সিজার শেষে তারা বাচ্চাটিকে উপুড় করে পিঠে ও বুকে আঘাত করতে থাকে। এক সময় আমার মেয়ে নিস্তেজ হয়ে গেলে তারা মাতুয়াইল পাঠিয়ে দেয়।

মাতুয়াইল হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তার জানান, আমার মেয়ে নাকি অনেক আগেই মারা গেছে'।

তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, 'আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার সন্তান হত্যার বিচার দাবি করছি'।

হসপিটালটিকে সিলগালা করার সময় যে সব রোগী হসপিটালে ভর্তি ছিল তাদেরকে সরকারী হাসপাতালে প্রেরণের নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামরুল ইসলাম খান জানান, 'পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই হসপিটাল বন্ধ থাকবে'। তিনি আরও বলেন, একটি হসপিটাল চালানোর জন্য সরকারের যে অনুমোদন, যন্ত্রপাতি ও ডাক্তার-নার্স থাকার প্রয়োজন তা এখানে নেই। সুতরাং এই অবস্থায় কোনভাবেই একটি হসপিটাল চলতে পারে না'।

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ শহিদুল ইসলাম শোভন বলেন,

' আমরা কোনভাবেই কোন অনিয়মকে বরদাস্ত করবো না। জনস্বাস্থ্যের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোন রকম আপোষ চলে না'। এসময় তিনি আরও বলেন, 'যারা সিজারের নামে এসব অপচিকিৎসার সঙ্গে জড়িত, তারা কখনএ ডাক্তার হতে পারে না'।

'নিরাপদ চিকিৎসা চাই' কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক মো. আলী আশরাফ খান বলেন,' আমাদের জানা মতে, সাইফুল ইসলাম কোনো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান নন। আমরা যতটা জানি, এমবিবিএস পাস শেষ আল্ট্রার উপর কোর্স সম্পন্ন করার পরেই একজন ডাক্তার আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে পারেন'।

তিনি আরও বলেন,' দাউদকান্দিতে সিজারের নামে

চলছে অপসংস্কৃতির মহোৎসব। এটি বন্ধ হওয়া দরকার। আমরা আশা করি, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যথাযথ নজর দেবেন'।



www.a2sys.co

আরো পড়ুন