শিরোনাম

প্রকাশঃ ২০২২-০৭-২৩ ১৭:৪৮:৪৮,   আপডেটঃ ২০২৪-০৫-১৫ ১৪:৩৯:২৭


লোকবল সংকটে মাছ রপ্তানিতে পিছিয়ে কুমিল্লা

লোকবল সংকটে মাছ রপ্তানিতে পিছিয়ে কুমিল্লা

নিজস্ব প্রতিবেদক 

২০২১-২০২২ অর্থবছরে কুমিল্লায় মাছের চাহিদা ছিল বার্ষিক এক লাখ ৪৬ হাজার ৩৫৭ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয় দুই লাখ ৮৪ হাজার ৪১ মেট্রিক টন। চাহিদা পূরণের পর বাড়তি ছিল এক লাখ ৪৭ হাজার ১৯৪ মেট্রিক টন মাছ। এই হিসাবে মিঠা পানিতে মাছ উৎপাদনে সারাদেশে কুমিল্লা জেলার অবস্থান দ্বিতীয়। এতো এতো মাছ উৎপাদন করেও জাতীয় অর্থনীতিতে এই জেলার কোন বিশেষ অবদান নেই। যার কারণ হিসেবে মৎস কর্মকর্তারা লোকবল সংকটকে দায়ী করছেন। 

শনিবার (২৩ জুলাই) দুপুরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত কুমিল্লা জেলা মৎস্য সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন ও মতবিনিময় সভা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে মৎস্য কর্মকর্তা ও অনুষ্ঠানের সভাপতি শরীফ উদ্দিন বলেন, গত অর্থবছরে মৎস্য সম্পদ রপ্তানি করে সারাদেশে আয় হয় চার হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। অথচ কুমিল্লায় এত বেশি মাছ উৎপাদন হয়েও কুমিল্লা থেকে গত অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ৫০ মেট্রিক টন মাছ। এতে আয় হয়েছে এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। 

আমাদের রপ্তানি আয়ের এই বেহাল দশার মূল কারণ হলো আমাদের লোকবল সংকট। আমরা যদি কোন কাজ বাস্তবায়ন করতে চাই অবশ্যই আমাদের ম্যান পাওয়ার দরকার। একটা চিন্তা বাস্তবায়ন আপনি তখনই করতে পারেন, যখন আপনার ম্যান পাওয়ার থাকে। আমাদের প্রচুর লোকবলের সংকট আছে। দশজন লোকের জায়গায় তিনজন লোক দিয়ে দশজনের কাজ আদায় করা সম্ভব নয়। তাছাড়া রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বাড়াতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয়ের দরকার। সবগুলো কাজ একসাথে হয়ে উঠছে না বিধায় রপ্তানি আয় কম। আমাদের দশা এখন ঢাল নাই তলোয়ার নাই, নিধিরাম সর্দার। 

শরীফ উদ্দিন আরও জানান, কুমিল্লায় মৎস্য সম্পদ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান নেই।   ৩০-৪০ জনের মাছ রপ্তানিকারক আছেন যারা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের কাছে কুমিল্লার মাছ পৌঁছে দেন। তারপর সেসব প্রতিষ্ঠান তা রপ্তানি করেন।

কুমিল্লা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, মৎস্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের উপ- পরিচালক আবদুস সাত্তার ও বিশেষ অতিথি কুমিল্লা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক নীতিশ সাহা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক আবদুস সাত্তার বলেন, বাংলাদেশে বিপন্নপ্রায় ৫৪ প্রজাতির দেশীয় মাছের মধ্যে ১৮টি মাছকে পুনরায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। মাছ উৎপাদনে প্রথম ময়মনসিংহ জেলা। কুমিল্লা জেলাকে প্রথম করতে আমরা কাজ করছি। পাশাপাশি তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে সরকারের সহায়তায় ব্যাপক কাজ করা হচ্ছে। উদ্যোক্তা হতে গিয়ে কেউ বাধার মুখে পড়লে উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগের অনুরোধ করছি। তাদের ব্যাংকের সাথে সমন্বয় করে ঋণ দেয়া হবে ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কুমিল্লায় সরকারিভাবে সাতটি প্রতিষ্ঠান পোনা উৎপাদন করে। এদের মধ্যে চারটি রেণু উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তিনটি পোনা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। বেসরকারি হ্যাচারি ৫৭টি। আগামী অর্থবছরে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা তিন দশমিক দুই তিন লাখ মেট্রিক টন। আগামীকাল ২৩ জুলাই থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত চলবে মৎস্য সপ্তাহ। এবারের প্রতিপাদ্য, 'নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।' 



www.a2sys.co

আরো পড়ুন